শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০২:১৬ পূর্বাহ্ন

নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ডুবেছে সরাইল- অরুয়াইল রাস্তা
রিপোর্টারের নাম / ১৮৬ বার
আপডেট সময় শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

মো. তাসলিম উদ্দিন সরাইল( ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
কয়েকদিনের মুষলধারে বৃষ্টি আর উজানের পাহাড়ি ঢলে মেঘনাওতিতাস নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। যার কারণে সরাইল উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। এর কারণে সরাইল- অরুয়াইল রাস্তায় পাকশিমুল এলাকার রাস্তার অংশ পানির নিচে অনেকেই বলেছেন তিতাস ও মেঘনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে আর কয়েক দিনের মুষলধারে বৃষ্টির কারণে সরাইল এলাকার চারিদিকে পানি বৃদ্ধি পেয়ে থৈথৈ অবস্থায় আছে। কারো বাড়ির পাশে খাল মেরে রাস্তায় পানি উঠেছে আবার কোন জায়গায় উঠা শুরু করেছে। সরাইল সদরে জাঙ্গালিয়া খাল মেরে ফসলি জমি মেরে ভাটি জমিতে নতুন ঘর-বাড়ির চারপাশে পানি দেখতে পাওয়া যায়। অনেক পরিবারের পক্ষ থেকে বলেছেন যে পানির জন্য আমরা ঘর থেকে বের হতে পারি না আমরা থাকি বন্দের মাঝে। এখন আসা যাওয়া করতে এবং বাচ্চাদেরকে নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তায় ও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বুধবার (২২ জুন) সকালের দিকে পাকশিমুল এলাকায় গেলে দেখা যায়, সরাইল- অরুয়াইল রাস্তায় পানি যানবাহন ধীর গতিতে চলাচল করছে সতর্ক অবস্থায়। পথচারীদের মাঝে আতংক বিরাজ করতেছে যদি এর চাইতে বেশি পানি বেড়ে যায় তাহলে চলাচল করা যাবেনা না বলে তারা জানান। এ সময় অনেকে জানান আমাদের বাড়ির ঘরের চার দিকে পানি উঠে গেছে রাস্তা সব তলিয়ে গেছে। এখন যে অবস্থা নৌকায় আসা যাওয়া করতে হবে। এদিকে ভারী বৃষ্টির কারণে উপজেলার ছোট ছোট নদী ও খাল ভরে গেছে পানিতে। চারদিকে শুধু পানি আর পানি।নদীপাড়ের মানুষজন জানায়, পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে উপজেলার অরুয়াইল, পাকশিমুল, চুন্টা, শাহজাদাপুর, নোয়াগাঁও কালিকচ্ছ, শাহবাজপুর সরাইল সদর ও পানিশ্বর ইউনিয়নের মেঘনা নদীর তীরবর্তী এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার শত শত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ভাটি অঞ্চলের রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ভেসে গেছে শত শত পুকুরের মাছ। এদিকে উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানান, পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরাইল উপজেলা প্রশাসনে ৬ হাজার মানুষের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। আজ থেকে দুর্গত এলাকায় ত্রাণ বিতরণের আশ্বাস দিয়েছেন সরাইল উপজেলা প্রশাসন।
উল্লেখ ভারী বৃষ্টির ফলে উপজেলার সরাইল- লাখাই আঞ্চলিক সড়কে পাশে সরাইল রাহমাতুল্লিল আলামীন দাখিল মাদরাসা মাঠের পানিনিষ্কাশনের সুষ্ঠু ব্যবস্থা নেই। পাশের খাল দখল করেছে একদল প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। বৃষ্টি হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হাঁটু পানি জমে। এই নিয়ে কোনো উদ্যোগ লক্ষ করা যায়নি। সরকারি খাল উদ্ধারের উদ্যোগ না নিয়ে সড়কের মধ্যে ফাঁক করে পাইপ দিয়েছে।
অরুয়াইল ইউপি চেয়ারম্যান মো.মোশাররফ হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, সোলাকান্দি ভাটি এলাকায় পনরটি পরিবার পানি বন্দি রয়েছে। আমার এলাকার পানি রক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হয়েছে। সরাইল- অরুয়াইল রাস্তা ভেঙ্গে পানির নিচে চলাচলের দূর্ভোগে পড়েছে এলাকার মানুষ। চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমানে অরুয়াইল বন্যার স্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছে তবে প্রায় গ্রামে এখন পানি তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সরাইল সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার বলেন, সদর ইউনিয়নের প্রায়ই খালে পানি ভরে রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে এবং বন্দে যে বাড়ি ঘর আছে তারা পানি বন্দি অবস্থায় আছে চতুর্দিকে পানি বৃদ্ধি পেয়ে রাস্তাঘাটে তলিয়ে গেছে।
পানিশ্বর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমার এলাকায় শোলাবাড়ি ও শাখাইতি মেঘনা নদী ভাঙ্গনের ২৫ টি পরিবারের বাড়িঘর বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে কয়েকটি রাস্তা তলিয়ে গেছে যদি এই অবস্থার পরিবর্তন না হয় তাহলে বিপর্যয় অবস্থায় ভোগ করতে হবে। এই ব্যাপারে আমি ইউএনও স্যারকে লিখিতভাবে জানাবো।কালিকচ্ছ ইউপি চেয়ারম্যান মো. সায়েদ মিয়া বলেন, নদী খাল মেরে বতর্মানে সহনীয় অবস্থায় রয়েছে। নিচু এলাকায় কিছু মানুষের বাড়ি ঘরে পানি চলে গেছে তবে এই অবস্থার অবনতি হলে রাস্তা ঘাটে চলাফেরাসহ মানুষের দুর্ভোগ হবে।
উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মোছা. নিলুফা ইয়াসমিন বলেন, যেসব রাস্তা ইতিমধ্যে পানির নীচে তলিয়ে গেছে আমরা এইসব রাস্তার রিপোর্ট তৈরি করছি। সরাইল- অরুয়াইল রাস্তার ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণকে জানানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে সরাইল উপজেলা নির্বাহি অফিসার মো.আরিফুল হক মৃদুল এ প্রতিনিধিকে বলেন, উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা হয়েছে। ইতিমধ্যেই বরাদ্দ পেয়েছি শুকনো খাবার প্যাকেট করার পর বিতরণ করা হবে। উপজেলার আশ্রয়ন প্রকল্প সহ ত্রাণ বিতরণ করা হবে। বর্তমান অবস্থার অবনতি হলে
ইউএনও বলেন,পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে ৬ হাজার মানুষকে আশ্রয় দিতে। দুর্গত এলাকায় সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অরুয়াইল আশ্রয়কেন্দ্রকে আমারা প্রস্তুত রেখেছি। এ ব্যপারে আমরা সবাই মাঠ পর্যায়ে কাজ করছি।

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর

জনপ্রিয় সংবাদ
সর্বশেষ সংবাদ