শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০২:০৬ পূর্বাহ্ন

বিষ প্রয়োগের গুঞ্জনেই ইস্তাম্বুলে রোমান
রিপোর্টারের নাম / ১৪২ বার
আপডেট সময় শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

 

ইস্তাম্বুলে ইউক্রেন ও রাশিয়ার শান্তি আলোচনায় প্রকাশ্যেই দেখা গেলো রুশ ধনকুবের রোমান আব্রামোভিচকে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রতিনিধিদলের আলোচনা চলাকালীন একটি ভিডিও ফুটেজ তুরস্কের মিডিয়াতে প্রচার হয়েছে, যেখানে তুরস্কের প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিনের পাশেই রোমান আব্রামোভিচকে বসে থাকতে দেখা গেছে। সে সময় ভাষা পরিবর্তনের ডিভাইস তার কানে লাগানো ছিল।

যদিও যেই টেবিলে রাশিয়া ও ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদলের আলোচনা চলছে, সেখানে তাকে দেখা যায়নি।

ইস্তাম্বুলে রোমানের উপস্থিতিতে স্পষ্ট যে শান্তি প্রচেষ্টায় তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

এদিকে ইউক্রেন বলছে, ইস্তাম্বুলে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় তাদের প্রধান অগ্রাধিকার হলো যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করা, যদিও এটি সম্ভব কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

রাশিয়া চায়, ন্যাটোতে যোগ না দিয়ে নিরপেক্ষ রাষ্ট্রের ভূমিকা পালন করুক ইউক্রেন। তবে এ ক্ষেত্রে আপোষ করতে রাজি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি।

এ ছাড়া ইউক্রেন থেকে পৃথক হয়ে যাওয়া দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের বিষয়ও আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

এর আগেও তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলিত সাভাসগলুর মধ্যস্থতায় আনাতোলিয়ায় এক দফা আলোচনা হয়ে গেছে ইউক্রেন ও রাশিয়ার। যুদ্ধ শুরুর পর সেই আলোচনাই ছিল দুই দেশের প্রথম উচ্চপর্যায়ের বৈঠক। তবে সে বৈঠকেও যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করা যায়নি।

গতকালকেই ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আব্রামোভিচসহ কিয়েভের শান্তি আলোচনায় অংশ নেয়া ইউক্রেনের দুই মধ্যস্থতাকারীর শরীরেও বিষক্রিয়ার লক্ষণ দেখা গিয়েছিল বলে দাবি করা হয়।

তবে চলতি মাসের শুরুতে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে এক শান্তি আলোচনায় রুশ ধনকুবের ও অলিগার্ক রোমান আব্রামোভিচকে রুশ কট্টরপন্থিদের বিষপ্রয়োগের বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকারই সন্দেহ পোষণ করেছে।

রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের আলোচনার সময় আব্রামোভিচ ও দুজন ইউক্রেনীয় কর্মকর্তার শরীরে যেসব লক্ষণ দেখা গেছে তা সম্ভবত আবহাওয়ার কারণে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গোয়েন্দা সূত্রের বরাতে এমনটাই বলছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

আব্রামোভিচের ঘনিষ্ঠ আরেকটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছিল, সেদিনের পর রুশ ধনকুবেরের শরীরে সন্দেহজন বিষক্রিয়ার লক্ষণ দেখা গিয়েছিল। এর মধ্যে চোখ লাল হয়ে যাওয়া, জ্বালা-পোড়া, চোখ দিয়ে পানি ঝরা এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোসকা পড়ার মতো ঘটনা ঘটেছিল।

গত এক মাসে ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে বেশ কয়েকবার আনাগোনাও করেছেন আব্রামোভিচ। বলা হচ্ছে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কির সঙ্গেও দেখা করেছেন। তবে জেলেনস্কির তরফ থেকে এ ধরনের কোনো অভিযোগ ওঠেনি।

সোমবার দিনের শুরুতে ইউক্রেনের মধ্যস্থতাকারী ও এমপি রাস্তেম উমেরভ এক টুইটে দাবি করেন, তিনি সুস্থ ছিলেন। তিনি জনগণকে গুজবে কান না দেয়ার পরামর্শ দেন।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি পুতিনের নির্দেশে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। এর প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়ার ব্যাংক, কর্মকর্তা ও প্রভাবশালী অলিগার্কদের ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিতে থাকে পশ্চিমা বিশ্ব।

অন্য অনেক অলিগার্কের মতোই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার অভিযোগ এনে রুশ এই ধনকুবেরের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাজ্য। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে চেলসির মালিকানাও হারাতে হচ্ছে তাকে।

তবে পুতিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন রোমান আব্রাহমোভিচ। এই ধনকুবের শুধু রাশিয়ার নাগরিকই নন, ইসরায়েল এবং পর্তুগালের নাগরিকত্ব রয়েছে তার।

এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়া যে রুশ কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তাদের মধ্যে রোমান আব্রামোভিচও রয়েছেন।

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর

জনপ্রিয় সংবাদ
সর্বশেষ সংবাদ