কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি:
কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী কটকবাজার। সময় মঙ্গলবার সকাল ১০টা। কেউ পলো নিয়ে আসছেন কেউবা কনুই জাল। কেউ কেউ আবার খালি হাতেই এসেছেন। তাদের এক হওয়ার উদ্দেশ্য গোমতী নদীতে মাছ ধরা।
গত কয়েক দিন ধরে গোমতী নদীতে মাছ ধরার উৎসব চলছে। এমন আয়োজনে মাছ ধরা নিয়ে সপ্তাহখানেক আগে থেকেই স্থানীয়ভাবে ঘোষণা দেয়া হয় গ্রাম থেকে গ্রামে। সেই ঘোষণা অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ে জেলে ও সাধারণ মানুষ এক হয়ে মাছ শিকার উৎসবে মেতে উঠেন।
জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে শৌখিন ও পেশাদার মাছ শিকারিরাও আসেন।
বছরের ফাগুন-চৈত্র মাসে গোমতীর পানি তলানিতে থাকে। এই কম পানিতে মাছ শিকার করতে কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলা থেকে সবাই একত্র হন।
কটকবাজার এলাকার বাসিন্দা ওয়াসিম মিয়া জানান, পানি কমে যাওয়ায় গোমতীতে এখন বাঘাইড়, বোয়াল, রুই, কাতল, পাঙ্গাস, কালিবাউশসহ নানা প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়।
জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলা থেকে মাছ ধরতে আসা আবদুর রব জানান, তিনি দুটি কালিবাউশ পেয়েছেন।
শখের বশে মাছ ধরেন তিনি। বলেন, ‘প্রতি বছর এই সময়টাতে সবার সঙ্গে মাছ ধরতে আসি। অন্যরা মাছ পেলেও গতকাল আমি কোনো মাছ পাইনি। তবে আশা পূর্ণ হয়েছে আজ, দুপুর পর্যন্ত হয়তো আরও মাছ পাব।’
আদর্শ সদর উপজেলার ষোলনল এলাকা থেকে মাছ ধরতে এসেছেন সবুর মিয়া। পেয়েছেন দুই কেজি ওজনের একটি রুই।
তিনি বলেন, ‘ভাই, আমি গরিব মানুষ। ক্ষেতি-কিষি কইরা সংসার চালাই। একটা রুই মাছ পাইছি। একজন আইছিল গাঙ্গের পাড় মাছ ধরা দেখতো। হেই মিয়া মাছটা এক হাজার টেকা দিয়ে কিনছে।’
তবে কনুই জাল থেকে মাছ ছুটে যাওয়ায় আফসোস করলছিলেন সুলতান আহমেদ। তিনি এসেছেন দেবিদ্বার থেকে।
বলেন, ‘জাল দিয়ে আমি গত কয়েকদিন আগে ৭ কেজি ওজনের একটি রুই মাছ পেয়েছি। আজ একটা জালে আটকাইছিল, কিন্তু পরে ছুটে গেছে।’