পাকিস্তানের রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য বিদেশী শক্তি, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করে আসছেন ইমরান খান। তিনি দাবি করেছিলেন, তার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব হাত রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। একটি ‘হুমকি দেয়া চিঠি’- তার হাতে আসার দাবি করলেও কার পক্ষ থেকে চিঠিটি এসেছে তা এতোদিন প্রকাশ করেননি ইমরান।
এবার জিও টিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সর্বশেষ রোববার পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার প্রধানমন্ত্রী ইমরানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবকে ‘অসাংবিধানিক’ বলে বাতিলের পর এবার হুমকির বিষয়ে মুখ খুলেছেন ইমরান।
সাবেক আইন প্রনেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি জানান, পাকিস্তানে হুমকি দেয়া চিঠি পাঠিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া ভিত্তিক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। এ বৈঠকে ইমরান খানকে বেশ আত্মবিশ্বাসী মনে হয়েছে।
তিনি জানান, ডোনাল্ড লু ও যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত আসাদ মাজিদের মধ্যে একটি বৈঠকে এই চিঠি প্রদানের ঘটনা ঘটে।
যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু বর্তমানে ভারত সফর করছেন। হিন্দুস্থান টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ‘হুমকিপূর্ণ বার্তা’ দেয়ার বিষয়ে তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি ইমরান খানের অভিযোগ অস্বীকার করেন।
এ ছাড়াও লু বলেন, যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন এবং পাকিস্তানের সাংবিধানিক প্রক্রিয়া ও আইনের শাসনকে যুক্তরাষ্ট্র সম্মান ও সমর্থন করে।
এর আগে ৩১ মার্চ জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া এক ভাষণে ইমরান খান বাইরের দেশ থেকে আসা হুমকির চিঠির বিষয়ে বলেছিলেন এবং এই ষড়যন্ত্রের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রকেই দায়ী করেছিলেন।
কে এই ডোনাল্ড লু
২০২১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন ডোনাল্ড লু। এর আগে ২০১৮ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত কিরগিজ প্রজাতন্ত্রে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আলবেনিয়াতেও তিনি একই পদে কর্মরত ছিলেন।
ইমরানের অভিযোগ নিয়ে হোয়াইট হাউস যা বলেছিল
শুক্রবার হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়ার ‘চক্রান্তে’ যুক্তরাষ্ট্র দায়ী বলে যে অভিযোগ করেছেন তার মধ্যে ‘বিন্দুমাত্র সত্যতা’ নেই।
হোয়াইট হাউসের প্রেস ব্রিফিং চলার সময় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে হোয়াইট হাউসের গণযোগাযোগ পরিচালক কেট বেডিংফিল্ড বলেন, ‘এই অভিযোগের বিন্দুমাত্র সত্যতা নেই।’