এনই আকন্ঞ্জি ,
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় অপহরণের ১০ দিন পর এক কিশোরীকে (১৪) উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (১৩ এপ্রিল) ওই কিশোরী উদ্ধার হওয়ার পর রাতেই ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়। তবে এই ঘটনায় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
কিশোরীকে উদ্ধারের পর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বিজয়নগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নুরুল ইসলাম এক কথা বলেন আবার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির্জা মোহাম্মদ হাছান বলছেন অন্য কথা। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগীর স্বজনরা।
মামলা ও ওই কিশোরীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের চতুরপুর গ্রামের এক নারী তার স্বামী মারা যাওয়ার পর এক কন্যা সন্তানসহ একই এলাকার দেওয়ান চৌধুরীর ছেলে মাসুদ রানা চৌধুরীকে বিয়ে করেন। সেই বিয়ে ২০২০ সালের মে মাসে আলাদলতে রোটারি পাবলিকের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করা হয়। এর কয়েক মাস পর ওই নারী ও মাসুদ রানা চৌধুরীর মধ্যে বিয়ে বিচ্ছেদ হয়।
পরে ওই নারী তার বাবার বাড়িতে মেয়েকে রেখে সৌদি আরবে চলে যান। ৩ এপ্রিল মেয়েটিকে তার নানার বাড়ি থেকে অপহরণ করে নিয়ে যান মাসুদ রানা চৌধুরী। বিষয়টি জানাজানি হলেও মাসুদ চৌধুরীর পরিবার প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ মুখ খুলেননি।
৭ এপ্রিল ওই কিশোরীর ফুফু বাদী হয়ে বিজয়নগর থানায় মাসুদ রানা চৌধুরীকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন। বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামি মাসুদ চৌধুরী ও তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে কিশোরীকে উদ্ধারের চেষ্টা চালান।
আসামিদের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের মাধ্যমে সমঝোতা করার চেষ্টা চালায় বিজয়নগর থানা পুলিশ। অবশেষে বুধবার বিকেলে কিশোরীকে উপজেলা এলাকায় ফেলে যায় অপহরণকারীরা। পরে সে থানায় আসে। রাতে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে তার ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়েছে।
এই ঘটনায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বিজয়নগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নুরুল ইসলাম বলেন, আজ (বুধবার) আমার ট্রেনিং ছিল। তারপরও মেয়েটিকে উদ্ধার করতে আসামিদের সঙ্গে মোবাইলে কথা চালিয়ে যাচ্ছিলাম। তারা বলছিলো ইসলামপুরের দিকে দিয়ে যাবে। আমি বাইরে ছিলাম, এরই মাঝে ওসি স্যার বললেন ভিকটিমকে পাওয়া গেছে। আমি ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নিয়ে এসেছি।
তবে বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির্জা মোহাম্মদ হাছান বলেন, ‘মেয়েটি নিজেই থানায় আসে। সে জানিয়েছে তার এক বান্ধবীর বাড়িতে ছিল।’
তাহলে তদন্তকারী কর্মকর্তা কেন আসামিদের সঙ্গে সমাঝোতার মাধ্যমে মেয়েটিকে ফেরত দেওয়ার কথা বললেন, এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, ‘এ কথা কেন বললেন, তা তিনি ভালো বলতে পারবেন।’
এই বিষয়ে মামলার বাদী ওই কিশোরীর ফুফু বলেন, পুলিশ সমঝোতার মাধ্যমে মেয়েকে উদ্ধার করেছে। এখন বিষয়টি ধামাচাপা দিতে নাটক সাজাচ্ছে। সত্য গোপন থাকে না।