শনিবার, ০১ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:০২ অপরাহ্ন

  • বাংলা বাংলা English English

ড্রাইভার না থাকায় এক বছর ধরে এম্বুলেন্স সেবা পাচ্ছে না আখাউড়া বাসী
সজল আহাম্মদ খাঁন / ১৪৪ বার
আপডেট সময় শনিবার, ০১ এপ্রিল ২০২৩

সজল আহাম্মদ খান: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সীমান্তবর্তী আখাউড়া উপজেলা। এ উপজেলার মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে প্রতিষ্ঠা করা হয় ২৫ শয্যা বিষিষ্ট একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। পরে আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। এখানে রোগীদের জন্য বর্তমানে রয়েছে দুটি অ্যাম্বুলেন্স। তবে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চালক না থাকায় উপজেলার প্রায় এক লাখ ৪৫ হাজার ২১৫ জন মানুষ অ্যাম্বুলেন্স সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মোট অ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যা চারটি। যান্ত্রিক ক্রটির কারণে অচল হয়ে পড়লে অনেক আগেই দুটি অ্যাম্বুলেন্সকে গ্যারেজ বন্দী করা হয়।২০ ২১ সালের ৩১ অক্টোবর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুলেন্স হস্তান্তর করে ভারতীয় হাই কমিশন। পরে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে দেওয়া হয় আরো একটি অ্যাম্বুলেন্স। ২০২১ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স চালক তাজুল ইসলাম পেনশনে গেলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তার গাড়ি চালক আবু বকরকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে বকর যখনই মূল দায়িত্বে ফিরে যায় তখনই শুরু হয় জটিলতা। পৌরশহরের শান্তিনগর গ্রামের জলিল মিয়া জানান, গত কয়েকদিন আগে অসুস্থ ভাইকে নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যায়। অবস্থার অবনতি হলে রাতে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাওয়ার জন্য সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের চালক না থাকায় বেশি ভাড়া দিয়ে একটি মাইক্রোবাস দিয়ে যেতে হয়।
আখাউড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাখায়াত হোসেন নয়ন জানান, রাতে আমার এক নিকট প্রতিবেশী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তার পরিবারের লোকজন আমাকে একটি অ্যাম্বলেন্সের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করে। একটি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য আখাউড়া জন্যস্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনেক চেষ্টা তদবির করি। হাসপাতালে কোনো চালক না থাকায় কর্তৃপক্ষ রোগীর জন্য অ্যাম্বলেন্সের ব্যবস্থা করে দিতে পারেনি। উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক নয়ন আরো জানান, রাত্র দশটার পরে আখাউড়া হাসপাতালে গিয়ে রোগীর জন্য প্রেসক্রিপশন করা যায় কিন্তু রাত ১০টার পর আখাউড়ায় কোন ঔষধের ফার্মেসি খোলা থাকেনা এবং ঔষধ পাওয়া যায় না, যদি উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ২৪ ঘন্টার একটা ফার্মেসি খোলা রাখার ব্যবস্থা করা যেত তাহলে উপজেলাবাসীর জন্য আরো ভালো হতো।আবুল কালাম নামের এক ব্যবসায়ি জানায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গুরুতর রোগীদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালসহ ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।এ অবস্থায় সরকারি অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে জরুরি চিকিৎসাসেবা নিতে স্থানান্তরিত রোগীদের ভরসা করতে হয় বেসরকারি অ্যাম্বূলেন্স, মাইক্রোবাস ও সিএনজি চালিত অটে রিকশার ওপর। এতে বাড়তি ভাড়া ও চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হয় এ উপজেলার রোগীদের।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার -পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.মোঃ হিমেল খান বলেন, আমি যোগদানের পর পরই অ্যাম্বুলেন্সের চালক নিয়োগের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্য ও মেয়রকেও অবগত করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন দ্রুত সময়ে শূন্যপদে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যাম্বুলেন্স চালক পদায়ন হলে উপজেলাবাসীর স্বাস্থ্যসেবারমান আরো বৃদ্ধি পাবে।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোমানা আক্তার এর নিকট এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যাম্বুলেন্সের গাড়িচালক নাই ব্যাপারটা আমি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিভিল সার্জন এবং উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ সহ সকলেই অবগত আছি। আশা করছি খুব দ্রুত আখাউড়া হাসপাতালে এম্বুলেন্স ড্রাইভার এর ব্যবস্থা হবে।

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর

জনপ্রিয় সংবাদ
সর্বশেষ সংবাদ