পুতিন বরাবর খোলা চিঠিতে বুধবার পেলে এই আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বিশ্বকাপে নির্বাচিত দল হবার লড়াইয়ে রয়েছে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের জাতীয় দল।
‘আজ ইউক্রেনের টিম ভুলে থাকার চেষ্টা করছে, অন্তত ৯০ মিনিটের জন্য, সেই ট্র্যাজেডি যা এখনও তাদের দেশকে গ্রাস করেছে। ইউক্রেনীয় পুরুষ ফুটবল দল বিশ্বকাপের প্লে অফ সেমিফাইনালে স্কটল্যান্ডের মুখোমুখি হওয়ার ঠিক আগে ইনস্টাগ্রামে খোলা চিঠিটি পোস্ট করেন পেলে।
‘আক্রমণ বন্ধ করুন- এই অনুরোধটি করার জন্য আমি আজকের এই ম্যাচটিকে সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করতে চাই। এই চলমান ও বিরামহীন সহিংসতার পেছনে কোনোই যৌক্তিকতা নেই।’ যোগ করেন তিনবারের বিশ্বকাপজয়ী এ তারকা।
‘এই সংঘাত শত্রুতায় ভরা, অযৌক্তিক। বেদনা, ভয়, সন্ত্রাস এবং যন্ত্রণা ছাড়া আর কিছুই দিতে পারেনি।… শুধু জাতিগুলোকে আলাদা করার জন্য যুদ্ধগুলো চলমান। শিশুদের স্বপ্নকে সমাহিত করা, পরিবারকে ধ্বংস করা এবং নিরপরাধ ব্যক্তিদের হত্যা করা ছাড়া ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের পেছনে কোনো মহৎ উদ্দেশ্য থাকতে পারে না।’
এ সময় পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং একটি দীর্ঘ করমর্দনসহ হাসি বিনিময়ের কথা স্মরণ করেন পেলে।
‘এই সংঘাত বন্ধের ক্ষমতা রয়েছে আপনার হাতে। আমি মস্কোতে ২০১৭ সালে আপনার সঙ্গে শেষ বৈঠকে সেই একটি হাত সজোরে চেপে ধরে ঝাঁকিয়েছিলাম।’
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ফুটবলার হিসেবে বিবেচিত পেলের খেলাধুলার ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বড় অর্জনটি ছিল ১৯৭৭ সালে অবসরে যাওয়ার আগে এক হাজারের বেশি গোল করেছিলেন তিনি।
তিনি সম্প্রতি শারীরিক অসুস্থতার মধ্য দিয়ে সময় পার করছেন।
চলতি বছর ২১ এপ্রিল কোলন ক্যানসারের চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল ছাড়েন ব্রাজিলের কিংবদন্তি ফুটবলার পেলে। চিকিৎসার জন্য চার দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনবারের বিশ্বকাপজয়ী এ তারকা।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সাও পাওলোর আলবার্ট আইনস্টাইন হাসপাতাল জানায়, ‘৮১ বছর বয়সী এই সাবেক ফুটবলারের শারীরিক অবস্থা ভালো এবং স্থিতিশীল রয়েছে।’
সর্বকালের সেরা ব্রাজিলের খেলোয়াড় হিসেবে পরিচিত পেলেই একমাত্র ফুটবল তারকা, যিনি বিশ্বকাপের তিনটি শিরোপা (১৯৫৮, ১৯৬২ ও ১৯৭০) জয় করেছেন। তার পরিবার জানিয়েছে, ৮১ বছর বয়সী এই মহাতারকাকে কোলন টিউমারের কেমোথেরাপি নিতে মাসে অন্তত একবার হাসপাতালে যেতে হয়।
কোলনের ক্যানসার শনাক্তের আগে গত বছর প্রায় এক মাস হাসপাতালে কাটাতে হয়েছিল পেলেকে। কিডনির পাথর অপসারণের জন্য ২০১৯ সালে প্যারিসের একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন সান্তোস ও ব্রাজিলীয় জাতীয় দলের এই সাবেক ফুটবলার। পরে সেখান থেকে সাও পাওলোয় স্থানান্তর করা হয় তাকে।
২০১৪ সালে মূত্রনালির সংক্রমণের কারণে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে থাকতে হয় পেলেকে। ওই সময় বাম পাশের কিডনি ডায়ালাইসিস করানো হয় তার। খেলোয়াড় থাকা অবস্থাতেই ১৯৭০-এর দশকে পেলের ডান পাশের কিডনি অপসারণ করা হয়।
তার নিতম্বেও সমস্যা রয়েছে। যে কারণে চলাফেরা কমিয়ে দিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে হুইলচেয়ার ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন।