নিজস্ব প্রতিবেদক :ওরা বলে-পঁচাত্তরের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার। কিন্তু বাংলাদেশে আর পঁচাত্তর ফিরে আসবে না। ১৫ আগস্ট ঘটতে দেওয়া হবে না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাদের ষড়যন্ত্রের বিষ দাঁত ভেঙে দেওয়া হবে। বাংলাদেশকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে, জনগণকে সাথে নিয়ে ষড়যন্তকারীদের বিষদাত ভেঙ্গে দেওয়া হবে ষড়যন্তকারীরা ভেবেছিল ৭৫ এর ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে, বন্দুকের জোরে সংবিধান পরিবর্তন করে দেশকে পাকিস্তান বানাবে। তাদের ষড়যন্ত্র সফল হয়নি।আজও তারা সেই একই স্বপ্ন দেখে। কিন্তু বাংলার মাটিতে তাদের সে ষড়যন্ত্রের স্বপ্ন কখনই সফল হবে না। ষড়যন্ত্রের সকল আস্তানা জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছারখার করে দেওয়া হবে।
শনিবার সকাল ১১টায় কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগ এর ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, খুনি জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়া এদেশের জনগণের উপর জগদ্দল পাথরের মত বসেছিল। বিএনপি বিদেশীদের সাথে প্রভুর সম্পর্ক করেছিল কিন্তু শেখ হাসিনা বিদেশীদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল।পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে সারাদেশে ঈদ উৎসব চলছে উল্লেখ্য করে নানক বলেন, পদ্মা সেতু উপলক্ষে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ঘরবাড়িগুলোতে সাজ-সজ্জা চলতেছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন মেহমানরা আসবে, ব্রিজের উপর দিয়ে চলাচল করবে। এ উপলক্ষে ওই অঞ্চলের মানুষের মাঝে ঈদ উৎসব চলতেছে
তিনি বলেন ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু ছয়দফা দাবী তুলে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছিল। কিন্তু বিএনপি যুদ্ধোপরাধি জামাত নেতা মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মুজাহিদকে মন্ত্রী বানিয়ে রক্ত দিয়ে অর্জিত স্বাধীনতার পতাকা তাদের গাড়িতে তুলে দিয়ে স্বাধীনতা ও দেশকে কলঙ্কিত করেছিল।
কসবা টি. আলী ডিগ্রী কলেজ মাঠে আয়োজিত উপজেলা আওয়ামী লীগ এর ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা সকাল থেকেই ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌ সভা থেকে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে ও বর্ণিল পোশাকে মিছিল নিয়ে আসতে থাকে। এক পর্যায়ে সভা শুরুর পূর্বেই সভাস্থল জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগ এর ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে এবং শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে উদ্বোধন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগ এর সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এমপি’র সভাপতিত্বে কসবা টি. আলী ডিগ্রী কলেজ মাঠে আয়োজিত উপজেলা আওয়ামী লীগ এর ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ এমপি, কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলাম এমপি, এবাদুল করিম বুলবুল এমপি, এম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম এমপি ও উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম (শিউলী আজাদ) এমপি। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কসবা পৌর সভার মেয়র মো. গোলাম হাক্কানী। এসময় সম্মেলনের কাউন্সিলর, কসবা পৌরসভাসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের সভাপতি আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছেন। তিনি তার তিন বছরের শাসনামলে বাংলাদেশকে সোনার বাংলা করতে চেয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু জামাতকে ছাড় দেওয়ায় তাঁর পরিবারের ১৭ জন প্রাণ দিয়েছিল। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিত করেছেন। আওয়ামী লীগ আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। যারা বাংলাদেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করে তাদের আইনের মাধ্যমে শাস্তি দেওয়া হবে। পদ্মা সেতু নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীরা ষড়যন্ত্র করেছিল যেন সেতু না হয়। সেসময় ড. ইউনুছ বিশ্ব ব্যাংকে গিয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণে বিরোধীতা করেছিল। বিশ্ব ব্যাংক অর্থায়ন বন্ধ করে দেওয়ার পরও জননেত্রী শেখ হাসিনা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছেন। আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতু আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ এমপি’র সঞ্চালনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগ এর সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি’র সভাপতিত্বে দুপুর দুই টায় দ্বিতীয় অধিবেশন অনুিষ্ঠত হয়। দ্বিতীয় অধিবেশনে সভাপতি পদে বিকল্প কোন প্রার্থী না থাকায় সর্বসম্মতিক্রমে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এমপিকে কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক পদে কসবা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এড. রাশেদুল কাওসার ভুঁইয়াকে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।