এনই আকন্ঞ্জি:ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তারিকুল ইসলাম নামে এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসার অভিযোগে হাসপাতালের স্টাফদের মারধর করেছেন রোগীর স্বজনরা। বুধবার (২০ জুলাই) সন্ধ্যার এ ঘটনায় পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।
রোগীর বড় ভাই জেলা শহরের উত্তর মৌড়াইল এলাকার বাসিন্দা রউফ খন্দকার অভিযোগ করে বলেন, আমার ছোট ভাই এনামুল হক লিটনের সঙ্গে মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) রাতে আখাউড়ায় কয়েকজন যুবকের ঝগড়া হয়। এ সময় ওই যুবকরা তাকে মারধর করে শরীরে কয়েকটি সুচ ঢুকিয়ে দেয়। তাকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক এক্স-রে করাতে বলেন। রাত প্রায় ১২টার দিকে শহরের জেলরোডে পেশেন্ট কেয়ার নামে একটি হাসপাতালে তাকে এক্স-রে করতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে এক্স-রে করে বুকের ভেতরে একটি সুচ পাওয়া যায়।
তখন হাসপাতালে উপস্থিত তারিকুল ইসলাম নামে এক চিকিৎসক জানান তিনি অপারেশন করে সুচটি বের করতে পারবেন। পরে ১০ হাজার টাকা চুক্তিতে লিটনের বুকের ভেতরে থাকা সুচ অপসারণে অপারেশন শুরু করেন। রাত প্রায় একটার দিকে অপারেশন থিয়েটারে লিটনের বুক কেটে কিছুক্ষণ পর সেই চিকিৎসক জানান, তার পক্ষে এই সুই অপসারণ করা সম্ভব নয়। পরে বুকের কাটা জায়গায় কাপড় ঢুকিয়ে ব্যান্ডেজ করে চিকিৎসক তারেক হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান।
এ অবস্থায় লিটনকে আরেকটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বুধবার দুপুরে সেখান থেকে জানানো হয় সুচটি বুকের আরও গভীরে চলে গেছে, তারাও অপরাগতা প্রকাশ করেন। এরপর কুমারশীল মোড়ে আরও একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে বিকেলে সেই হাসপাতাল থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়।
রউফ খন্দকার বলেন, চিকিৎসক তারিকুলের অবহেলায় ও অপচিকিৎসার কারণে আমার ভাইয়ের শরীরের গভীরে সুচটি ডুকে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে। লিটনের শারীরিক অবস্থার কথা জেনে বিকেলে আমাদের স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে পেশেন্ট কেয়ার হাসপাতালে গেলে কিছুটা বাগবিতণ্ডা হয়। চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আমরা লিখিত অভিযোগ দিব।
পেশেন্ট কেয়ার শিশু ও জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক (প্রশাসন) ইয়াছিন চৌধুরী বলেন, ওই চিকিৎসক আমাদের হাসপাতালে বসেন না। বাইরে থেকে রোগী নিয়ে আসেন তিনি। বিকেলে আমাদের হাসপাতালে কিছু যুবক এসে স্টাফদের মারধর করে এবং হাসপাতালের সামনে থাকা কিছু মোটরসাইকেল ভাঙচুরের চেষ্টা করে।
খবর পেয়ে হাসপাতালে আসা ব্রাহ্মণবাড়িয়া ১নং শহর পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) হুমায়ূন কবির বলেন, খবর পেয়ে আমরা হাসপাতালে এসেছি। উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। আমরা বলেছি, কারো কোনো অভিযোগ থাকলে লিখিতভাবে থানায় দিতে। লিখিত অভিযোগ অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. একরামউল্লাহ বলেন, চিকিৎসক বা হাসপাতালের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।